সরাসরি প্রধান সামগ্রীতে চলে যান

মানুষ কি দেখে বিয়ে করবে

গ্রন্থঃ সহীহ বুখারী (তাওহীদ)
অধ্যায়ঃ ৬৭/ বিয়ে (كتاب النكاح)
হাদিস নম্বরঃ ৫০৯০


৬৭/১৬. স্বামী এবং স্ত্রীর একই দ্বীনভুক্ত হওয়া এবং আল্লাহর বাণীঃ অর্থাৎ ‘‘তিনিই পানি থেকে সৃষ্টি করেছেন মানুষ, অতঃপর মানুষকে করেছেন বংশ সম্পর্কীয় ও বিবাহ সম্পর্কীয়, তোমার প্রতিপালক সব কিছু করতে সক্ষম।’’ সূরাহ আল-ফুরকানঃ ৫৪)

৫০৯০. আবূ হুরাইরাহ (রাঃ) হতে বর্ণিত। নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেন, চারটি বিষয়ের প্রতি লক্ষ্য রেখে মেয়েদেরকে বিয়ে করা হয়ঃ তার সম্পদ, তার বংশমর্যাদা, তার সৌন্দর্য ও তার দ্বীনদারী। সুতরাং তুমি দ্বীনদারীকেই প্রাধান্য দেবে নতুবা তুমি ক্ষতিগ্রস্ত হবে। [1] [মুসলিম ১৭/১৫, হাঃ ১৪৬৬, আহমাদ ৯৫২৬] (আধুনিক প্রকাশনী- ৪৭১৭, ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৪৭১৯)

[1] যে সব কারণে একজন পুরুষ বিশেষ একটি মেয়েকে স্ত্রীরূপে বরণ করার জন্য উৎসাহিত ও আগ্রহান্বিত হতে পারে তা হচ্ছে চারটি। (১) সৌন্দর্য (২) সম্পদ (৩) বংশ (৪) দীনদারী। এ গুণ চতুষ্টয়ের মধ্যে সর্বশেষে উল্লেখ করা হয়েছে দীনদারী ও আদর্শবাদিতার গুণ। আর এ গুণটিই ইসলামের দৃষ্টিতে সর্বাগ্রগণ্য ও সর্বাধিক গুরুত্বপূর্ণ। নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর আলোচ্য নির্দেশের সার কথা হল- দীনদারীর গুণসম্পন্না কনে পাওয়া গেলে তাকেই যেন স্ত্রীরূপে বরণ করা হয়, তাকে বাদ দিয়ে অপর কোন গুণসম্পন্না মহিলাকে বিয়ে করতে আগ্রহী হওয়া উচিত নয়- (সুবুলুস সালাম)। চারটি গুণের মধ্যে দ্বীনদার হওয়ার গুণটি কেবল যে সর্বাধিক গুরুত্বপূর্ণ তা-ই নয়, এ গুণ যার নেই তার মধ্যে অন্যান্য গুণ যতই থাক না কেন, ইসলামের দৃষ্টিতে সে অগ্রাধিকার যোগ্য কনে নয়। রসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর হাদীস অনুযায়ী তো দ্বীনদারীর গুণ বঞ্চিতা নারী বিয়ে করাই উচিত নয়। তিনি স্পষ্ট ভাষায় নির্দেশ দিয়েছেন- তোমরা স্ত্রীদের কেবল তাদের রূপ-সৌন্দর্য দেখেই বিয়ে করো না- কেননা এরূপ সৌন্দর্যই অনেক সময় তাদের ধ্বংসের কারণ হতে পারে। তাদের ধন-মালের লোভে পড়েও বিয়ে করবে না, কেননা এ ধনমাল তাদের বিদ্রোহী ও অনমনীয় বানাতে পারে। বরং তাদের দ্বীনদারীর গুণ দেখেই তবে বিয়ে করবে। বস্ত্তত একজন দীনদার কৃষ্ণাঙ্গ দাসীও কিন্তু অনেক ভাল- (ইবনে মাজাহ, বাযযার, বাইহাকী)। নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-কে জিজ্ঞেস করা হয়েছিল- বিয়ের জন্য কোন্ ধরনের মেয়ে উত্তম? জবাবে তিনি বলেছিলেন- যে স্ত্রীকে দেখলে সে তার স্বামীকে আনন্দ দেয়, তাকে যে কাজের আদেশ করা হয় তা সে যথাযথ পালন করে এবং তার নিজের স্বামীর ধন মালের ব্যাপারে স্বামীর পছন্দের বিপরীত কোন কাজই করে না- (মুসনাদে আহমাদ)। নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম আরো বলেছেন- দুনিয়ার সব জিনিসই ভোগ সামগ্রী আর সবচেয়ে উত্তম সামগ্রী হচ্ছে নেক চরিত্রের স্ত্রী- (মুসনাদে আহমাদ)। উপরে উদ্ধৃত হাদীসগুলো থেকে সে কথাটি স্পষ্ট হয়ে উঠছে তা এই যে, ইসলামের দৃষ্টিতে তাকওয়া, পরহেযগারী, দীনদারী ও উন্নত চরিত্রই হচ্ছে জীবন সঙ্গিনী পছন্দ করার ক্ষেত্রে সর্বাধিক গুরুত্বপূর্ণ বিবেচ্য বিষয়। হাদিসের মানঃ সহিহ (Sahih) 

মন্তব্যসমূহ

এই ব্লগটি থেকে জনপ্রিয় পোস্টগুলি

তিন শ্রেণীর লোক দ্বারা সর্বপ্রথম জাহান্নাম উদ্বোধন

♪♪তিন শ্রেণীর লোক দ্বারা সর্বপ্রথম জাহান্নাম উদ্বোধন করা হবে। যথাঃ (ক) শহীদ। (খ) আলেম এবং (গ) দানবীর। ★হাদিস: তিন শ্রেণীর লোক সর্বপ্রথম জাহান্নামে যাবেঃ প্রখ্যাত সাহাবী আবু হুরায়রা রাদিয়াল্লাহু আনহু বলেন, আমি রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামকে ইরশাদ করতে শুনেছি, নবীজী বলেন:কেয়ামতের দিন সর্বপ্রথম যাদের বিচার করা হবে, শাহাদত বরণকারী একজন লোক, তাকে উপস্থিত করা হবে এবং আল্লাহ প্রদত্ত্ব যাবতীয় নেয়ামত সম্পর্কে জ্ঞাত করা হবে সে সব নেয়ামতকে চিনে বা মেনে নেবে। তখন তাকে বলা হবে: এসব নেয়ামতের পরিপ্রেক্ষিতে তুমি কি কি আমল করেছ? বলবে: আপনার তরে লড়াই-জিহাদ করেছি এবং শহীদ হয়ে গিয়েছি। বলা হবে: তুমি মিথ্যা বলছ। বরং তুমি লড়াই করেছ এজন্য যে, লোকেরা তোমাকে বীর-বাহাদুর বলবে। তাতো বলা হয়েছে। অত:পর তার ব্যাপারে রায় ঘোষণা করা হবে এবং তাকে চেহারার উপর ভর দিয়ে টেনে নিয়ে (যাওয়া হবে এবং) জাহান্নামে নিক্ষেপ করা হবে। →দ্বিতীয় পর্যায়ে, আলেম ব্যক্তি যে নিজে দ্বীনী ইলম শিক্ষা গ্রহণ করেছে, অপরকে শিক্ষা দিয়েছে এবং কোরআন পড়েছে। তাকে উপস্থিত করা হবে এবং প্রদত্ত নেয়ামত সম্পর্কে জ্ঞাত করা হবে। সে সব নেয়ামত...

ভ্রান্ত আলেম

ভ্রান্ত আলেম ভ্রান্ত আলেমঃ- নবি(স) বলেন,আমি আমার উম্মতের একটি বিষয়কে দজ্জালে চেয়ে ও বেশী ভয় করি। আমি ভয় পেয়ে জিজ্ঞেস করলাম, হে আল্লাহর রসুল সেটা কি? তিনি বল্লেন,বিপথগামী ও পথভ্রষ্ট আলেম(সহি মুসলিম:৬,৭ মুসনাদে আহমদ:২১৬২১,২১৬২২ তাবরানী:৭৬৫৩)। আলেমগন(ভাল) ইসলামের পাহরাদার বল্লেও, দুর্ভাগ্য যে বর্তমানে কিছু লোক (পীর নিয়ন্ত্রিত) মাদ্রাসায় সাজেশান পড়ে আলেম সার্টিফিকেট সংগ্রহ করে, কিন্তু তারা কুরআন সম্পূর্ণ পড়ে না,বিধায় আমাদের সমাজে পথভ্রষ্ট ও ভ্রান্ত আলেম বেড়ে গেছে। তাদের অজ্ঞতায় সৃজিত জাল-যঈফ হাদিসের জন্য সাধারণ মুসলিম শির্ক ও বিদাআত চিনতে পারছেন না। এরাই বর্তমানে বলে বেড়ায় "ধর্ম বুঝা কঠিন, মাদ্রাসা না পড়লে কোন ভাবেই ধর্ম জানা যায় না তারচে তারা যা বলে তা অন্ধ ভাবে অনুসরণ করতে"। প্রকৃত পক্ষে- এটি সহজ ও দলিল ভিত্তিক ধর্ম।এটা মানতে কুরআন ও সুন্নাহ(in to to) অনুসরণ করতে হয়। কোন পীর,ঈমাম কিংবা আলেম এর স্বপ্ন,ইচ্ছা,গনতন্ত্র, ভাল লাগা, না লাগার উপর ইসলাম নির্ভর করে না। আল্লাহ্‌ বলেন, আলেমদের অন্ধ অনুসরণ করা হারাম(সুরা নাহল:১৬/৪৩,সুর আ"রাফ:৭/৩, সুরা আহযাব:৩৩/৬৭) [Mahbubul ...

হকপন্থী দল কারা ?”

হকপন্থী দল কারা ?” সওবান (রাঃ) হ’তে বর্ণিত রাসূলুল্লাহ (ছাঃ) হকপন্থী দল সম্পর্কে ভবিষ্যদ্বাণী করে বলেন, "চিরদিন আমার উম্মতের মধ্যে একটি দল হকের উপরে বিজয়ী থাকবে। পরিত্যাগকারীরা তাদের কোন ক্ষতি করতে পারবে না, এমতাবস্থায় ক্বিয়ামত এসে যাবে, অথচ তারা ঐভাবে থাকবে ।” (সহীহ মুসলিম ‘ইমারত’ অধ্যায়-৩৩, অনুচ্ছেদ-৫৩, হা/১৯২০; ফাৎহুল বারী হা/৭১ ‘ইল্ম’ অধ্যায় ও হা/৭৩১১-এর ভাষ্য ‘কিতাব ও সুন্নাহকে, ‘আঁকড়ে ধরা’ অধ্যায়; আলবানী, সিলসিলা ছহীহাহ হা/২৭০) ইমাম আহমাদ বিন হাম্বল (১৬৪-২৪১ হিঃ)-কে ‘ক্বিয়ামত পর্যন্ত হক-এর উপরে একটি দল টিকে থাকবে’ মর্মে বর্ণিত হাদীছের ব্যাখ্যা জানতে চাইলে তিনি দ্ব্যর্থহীন ভাষায় বলেন, -“তারা যদি ‘আহলে হাদীস’ না হয়। তাহ’লে আমি জানি না তারা কারা ?” (তিরমিযী হা/২১৯২; মিশকাত হা/৬২৮৩-এর ব্যাখ্যা; ফাৎহুল বারী ১৩/৩০৬ পৃঃ, হা/৭৩১১-এর ব্যাখ্যা; সিলসিলা ছহীহাহ হা/২৭০-এর ব্যাখ্যা; শারফু আসহাবিল হাদীস পৃঃ ১৫।) ইমাম আবু আব্দুল্লাহ আল-হাকিম(মৃঃ ৪০৫ হিঃ) বলেন, ইমাম আহমাদ ইবনে হাম্বল এই মন্তব্য করে ভালোই করেছেন যে, কিয়ামত পর্যন্ত টিকে থাকার সেই বিজয়ী দলটি হল ‘আসহাবুল হাদিস’। (ম...