সরাসরি প্রধান সামগ্রীতে চলে যান

কেন সন্তান হিজড়া হয়

কেন সন্তান হিজড়া হয়?

হিজড়াদের সাথে আমরা কম বেশী সবাই পরিচিত। কিছু মানুষ হিজড়াদের সাথে মজা করতে পছন্দ করে, কেউ আবার এড়িয়ে চলে। নারীদের ক্ষেত্রে তারা হিজড়াদের রীতিমত ভয় পায় বিশেষ করে তাদের অশোভন আচরণ এর কারণে। হিজড়ারা মূলত সমাজে স্বাভাবিক জীবন যাপন করতে না পেরে নিজেরা আলাদা সমাজ গড়ে তোলে। পরে সমাজ তাদেরকে বঞ্ছিত করেছে স্বাভাবিক জীবন থেকে এই ধারণা থেকে এসব অশোভন আচরণ করে থাকে। হিজড়াদের সম্পর্কে আমরা অনেকেই জানি না। অনেকে আবার ভুল ধারণা পোষন করি। আসুন আজ জেনে নেব হিজরা হওয়ার কারণ সম্পর্কে। হিজড়া কি? কেন হিজড়া হয়? হিজড়া কত প্রকার? হিজড়ার কি চিকিৎসা সম্ভব? ইত্যকার নানা বিষয়।

হিজড়া শব্দটি এসেছে আরবী হিজরত বা হিজরী শব্দ থেকে যার আভিধানিক অর্থ পরিবর্তন বা Migrate বা Transfer।  হিজড়া’ শব্দটির আভিধানিক অর্থ উভয় লিঙ্গ (Common Gender), ইংরেজীতে একে ট্রান্সজেন্ডার (Transgender) বলা হয়।  যদি সহজে বুঝতে চান হিজড়া কি তাহলে এতটুকু বুঝুন যে, একজন মানুষ যার শরীরটা পুরষের আর মনটা নারীর অথবা মনটা পুরুষের আর শরীরটা নারীর। অবশ্য এই ২ প্রকার হিজরা ছাড়াও আরো ৪ রকমের হিজড়া রয়েছে।

হিজড়া কেন হয়?

মানুষ যেমন দৃষ্টি প্রতিবন্ধী হয়, শ্রবণ প্রতিবন্ধী হয় তেমনি যৌন প্রতিবন্ধিও হতে পারে। হিজড়া’রা হচ্ছে যৌন প্রতিবন্ধী। বৈজ্ঞানিক ব্যাখ্যায় বলা হয়। মানুষের ২৩ জোড়া ক্রোমোজোম তার আকৃতি প্রকৃতি ঠিক করে। এর মধ্যে ২২ জোড়া ঠিক করে একটি শিশুর তাবৎ বৈশিস্ঠ্য আর একজোড়া বা ২টি ক্রোমোজোম ঠিক করে শিশু ছেলে না মেয়ে হবে। সে একজোড়া ক্রোমোজোম বাবার কাছ থেকে আসে XY আর মায়ের কাছ থেকে আসে XX। এই এক্স ও ওয়াই এর কম্বিনেশান জটিলতার কারণে শিশু হিজড়া হয়।

XX প্যাটার্ন ক্রোমোজমে কন্যা শিশু আর XY প্যাটার্ন ক্রোমোজমে সৃষ্ট হয় ছেলে শিশু। অর্থাৎ, X এর সঙ্গে X এর মিলনে মেয়ে বা xx এবং X এর সঙ্গে Y এর মিলনে ছেলে সন্তান বা XY জন্ম নেয়। এবং  ভ্রুনের পূর্ণতার স্তরগুলোতে ক্রোমোজোম প্যাটার্নের প্রভাবে ছেলে শিশুর মধ্যে অন্ডকোষ আর কন্যা শিশুর মধ্য ডিম্ব কোষ জন্ম । এক্ষেত্রে ভ্রুনের বিকাশকালে নিষিক্তকরণ ও বিভাজনের ফলে বেশকিছু অস্বাভাবিক প্যাটার্নের সৃষ্টি হতে পারে যখনি এমনটা হয় তখনি শিশুর লিঙ্গ জনিত সমস্যার সৃষ্টি হয়। সে হয়তো সঠিক লিঙ্গ পায়না, অথবা পুরুষ লিঙ্গ পেয়েও পুরুষত্ব পায়না আবার নারী লিঙ্গ পেয়েও নারীত্ব পায়না। তখন এক্স ও ওয়াই এর কম্বিনেশান স্বাভাবিক হয়না, যেমন XXY অথবা XYY। বা XYX বা YXY এর ফলে বিভিন্ন গঠনের হিজড়া শিশুর জন্ম হয়। ভ্রুনের পূর্ণতার স্তরগুলোতে ক্রোমোজম গঠ‌নের প্রভাবে ছেলে শিশুর মধ্যে ‘অন্ডকোষ’ আর কন্যা শিশুর মধ্য ‘ডিম্বকোষ’ জন্ম নেয়। অন্ডকোষ থেকে নিসৃত হয় পুরুষ হরমোন এন্ড্রোজেন এবং ডিম্বকোষ থেকে নিসৃত হয় এস্ট্রোজেন। এক্ষেত্রে ভ্রুনের বিকাশকালে নিষিক্তকরণ ও বিভাজনের ফলে বেশকিছু অস্বাভাবিক গঠ‌নের সৃষ্টি হয়। যেমন, XXY অথবা XYY। এর ফলে বিভিন্ন গঠনের হিজড়া শিশুর জন্ম হয়।



হিজড়া এর প্রকারভেদ

আধুনিক জেনেটিক্স বা চিকিৎসাবিজ্ঞানের মতে হিজড়া হলো সেক্র ক্রোমোজমের ত্রুটিপূর্ণ বিন্যাস (Chromosomal Aberration) বা জিন জনিত জন্মগত যৌন প্রতিবন্ধি ব্যাক্তি যাদের জন্ম পরবর্তী সঠিক লিঙ্গ নির্ধারণে জটিলতা দেখা দেয়। প্রাকৃতিক ভাবে চার ধরনের হিজড়া হলেও আজকাল অসৎ উদ্দেশ্যে নারী পুরুষদের অপারেশন ও হরমোণ পরিবর্তণ করে হিজড়া বানানো হয়।

এদের প্রধান সমস্যা গুলো হল এদের লিঙ্গে নারী বা পুরূষের নির্দিষ্ট বৈশিষ্ট্য থাকে না। কারো কারো ক্ষেত্রে দেখা যায় লিঙ্গ নির্ধারক অঙ্গ থাকে না। এসবের উপর নির্ভর করে তাদেরকে কয়েকটি ভাগে ভাগ করা যায।মূলত এটি একটি শারীরিক গঠনজনিত সমস্যা যা অন্যান্য প্রতিবন্ধীদের মতই কিন্তু প্রতিবন্ধকতার স্থানটি ভিন্ন হওয়াতেই তারা হিজড়া। হিজড়াদের শারীরিক গঠন মূলত ৪ প্রকার। কিছু হিজড়া হলো যাদের মধ্যে নারী নারী জননাঙ্গ থাকে না। আবার কিছু হিজড়া হলো যাদের পুরুষের সকল বৈশিষ্ট্য থাকা সত্বেও পুরুষ জননাঙ্গ থাকে না। এছাড়া কিছু হিজড়ার উভয় বৈশিষ্ট্য বিদ্যমান। কারো কোনোটাই থাকেনা। আর শারীরিক ও মানসিক গঠনের উপর নির্ভর করে এদেরকে ৬ ভাগে ভাগ করা যায়। শারীরিক ভাবে পুরুষ কিন্তু মানষিক ভাবে নারী বৈশীষ্ট্য এর অধীকারী হিজড়াদের বলা হয় অকুয়া, ঠিক বিপরীত হিজড়াদের বলা হয় জেনানা, আর মানুষের হাতে সৃষ্ট বা ক্যাসট্রেড পুরুষদের বলা হয় চিন্নি।

যদি কোন হিজরা নারী পুরুষাঙ্গের অধিকারী হয় আর সন্তান উৎপাদনে সক্ষম হয় তবে এদের নারী ধরা হয়। ইসলামে হিজড়াদের অস্তিত্ব স্বীকার করা হলেও গোপনাঙ্গের ধর‌ণের ভি‌ত্তি‌তে হিজড়া‌দের নারী অথবা পুরুষের মধ্যে অন্তর্ভুক্ত করার কথা বলা হয়েছে।  সেই অনুযায়ীই তা‌কে পর্দা, নামায, রোযা পালন করতে হবে, এমনকি সে মোতাবেক সম্পদের ভাগ ভাটোয়ারা করে দেয়া হয়েছে। যদিও আমাদের সমাজে হিজড়াদের পৈত্রিক সম্পত্তি থেকে বঞ্চিত করা হয়।

আশার কথা

হিজড়া বৈশিষ্ট্য নিয়ে জন্মানো কোন শিশুর যদি পরিনত বয়সে যাওয়ার আগে চিকিৎসা করা হয় তাহলে বেশীভাগ ক্ষেত্রেই তাকে সুস্থ করা সম্ভব। কিন্তু যখন আসলে বোঝা যায় সে সাধারন আর দশজনের থেকে আলাদা তখন আসলে অনেক দেরী হয়ে যায়। এছাড়াও জ‌ন্মের পর বাড়ন্ত সম‌য়ে শিশুর যখন অস্বাভা‌বিকতা বা হিজড়ার বৈ‌শিষ্ট্য প্রকাশ পায়; তাহ‌লে তৎক্ষণাৎ পরিণত বয়সে যাওয়ার আগে যদি স‌ঠিক মেডিকেল ট্রিটমেন্ট করা হয় তাহলে বেশীভাগ ক্ষেত্রেই তাকে সুস্থ করা সম্ভব। স‌ঠিক অপারেশনের মাধ্যমে হিজড়া‌দের লিঙ্গ সমস্যার সমাধান সম্ভব। মুস‌লিম রাষ্ট্র ইরা‌নে সরকা‌রি উ‌দ্যো‌গে, অপা‌রেশ‌নের মাধ্য‌মে হিজড়া‌দের পূনর্বাস‌নের ব্যবস্থা করা হয়। হিজড়া সম্প্রদায় সৃ‌ষ্টির সেরা জীব বা আশরাফুল মাখলুকাতের অন্তর্ভুক্ত। অর্থাৎ মানু‌ষের পর্যায়ভুক্ত, তারাও সৃষ্টির সেরা। তাদের অবজ্ঞা করা মানে আল্লাহর সৃষ্টিকেই অবজ্ঞা করা। হিজড়াদের নিয়ে রাসুল (স) এর হাদীস রয়েছে। একজন হিজড়া পবিত্র ক্বাবাঘরের খাদেম এর দায়িত্ব পালন করেছেন বলে শোনা যায়। ভারতে হিজড়ারা ভাতাসহ নানা সুবিধা পায়। পায় একটি সংসদ সদস্যপদ। বাংলাদেশে হিজড়ারা দীর্ঘদিনে আন্দোলন করে ভোটাধিকার এবং তৃতীয় লিঙ্গের নাগরিক হিসেবে স্বীকৃতি পেয়েছে। সরকার তাদেরকে চাকরী বাকরী দেয়ার কথা ভাবছে। তবে তাদের জন্য সবচেয়ে বেশী যেটা প্রয়োজন সেটা হলো শিক্ষা। সঠিক শিক্ষায় শিক্ষিত করতে পারলে তারা নিজেরাই তাদের অধিকার এবং কাজ খুঁজে নেবে।

কিন্তু দু:খের বিষয় হলেও সত্য যে, এদের মধ্যে কিছু লোক হিজড়াদের দিয়ে চাঁদাবাজী করানোর জন্য তাদেরকে বাইরের লোকদের সাথে মিশতে এবং শিক্ষা গ্রহণ করতে দিতে চায়না।

মন্তব্যসমূহ

এই ব্লগটি থেকে জনপ্রিয় পোস্টগুলি

তিন শ্রেণীর লোক দ্বারা সর্বপ্রথম জাহান্নাম উদ্বোধন

♪♪তিন শ্রেণীর লোক দ্বারা সর্বপ্রথম জাহান্নাম উদ্বোধন করা হবে। যথাঃ (ক) শহীদ। (খ) আলেম এবং (গ) দানবীর। ★হাদিস: তিন শ্রেণীর লোক সর্বপ্রথম জাহান্নামে যাবেঃ প্রখ্যাত সাহাবী আবু হুরায়রা রাদিয়াল্লাহু আনহু বলেন, আমি রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামকে ইরশাদ করতে শুনেছি, নবীজী বলেন:কেয়ামতের দিন সর্বপ্রথম যাদের বিচার করা হবে, শাহাদত বরণকারী একজন লোক, তাকে উপস্থিত করা হবে এবং আল্লাহ প্রদত্ত্ব যাবতীয় নেয়ামত সম্পর্কে জ্ঞাত করা হবে সে সব নেয়ামতকে চিনে বা মেনে নেবে। তখন তাকে বলা হবে: এসব নেয়ামতের পরিপ্রেক্ষিতে তুমি কি কি আমল করেছ? বলবে: আপনার তরে লড়াই-জিহাদ করেছি এবং শহীদ হয়ে গিয়েছি। বলা হবে: তুমি মিথ্যা বলছ। বরং তুমি লড়াই করেছ এজন্য যে, লোকেরা তোমাকে বীর-বাহাদুর বলবে। তাতো বলা হয়েছে। অত:পর তার ব্যাপারে রায় ঘোষণা করা হবে এবং তাকে চেহারার উপর ভর দিয়ে টেনে নিয়ে (যাওয়া হবে এবং) জাহান্নামে নিক্ষেপ করা হবে। →দ্বিতীয় পর্যায়ে, আলেম ব্যক্তি যে নিজে দ্বীনী ইলম শিক্ষা গ্রহণ করেছে, অপরকে শিক্ষা দিয়েছে এবং কোরআন পড়েছে। তাকে উপস্থিত করা হবে এবং প্রদত্ত নেয়ামত সম্পর্কে জ্ঞাত করা হবে। সে সব নেয়ামত...

ভ্রান্ত আলেম

ভ্রান্ত আলেম ভ্রান্ত আলেমঃ- নবি(স) বলেন,আমি আমার উম্মতের একটি বিষয়কে দজ্জালে চেয়ে ও বেশী ভয় করি। আমি ভয় পেয়ে জিজ্ঞেস করলাম, হে আল্লাহর রসুল সেটা কি? তিনি বল্লেন,বিপথগামী ও পথভ্রষ্ট আলেম(সহি মুসলিম:৬,৭ মুসনাদে আহমদ:২১৬২১,২১৬২২ তাবরানী:৭৬৫৩)। আলেমগন(ভাল) ইসলামের পাহরাদার বল্লেও, দুর্ভাগ্য যে বর্তমানে কিছু লোক (পীর নিয়ন্ত্রিত) মাদ্রাসায় সাজেশান পড়ে আলেম সার্টিফিকেট সংগ্রহ করে, কিন্তু তারা কুরআন সম্পূর্ণ পড়ে না,বিধায় আমাদের সমাজে পথভ্রষ্ট ও ভ্রান্ত আলেম বেড়ে গেছে। তাদের অজ্ঞতায় সৃজিত জাল-যঈফ হাদিসের জন্য সাধারণ মুসলিম শির্ক ও বিদাআত চিনতে পারছেন না। এরাই বর্তমানে বলে বেড়ায় "ধর্ম বুঝা কঠিন, মাদ্রাসা না পড়লে কোন ভাবেই ধর্ম জানা যায় না তারচে তারা যা বলে তা অন্ধ ভাবে অনুসরণ করতে"। প্রকৃত পক্ষে- এটি সহজ ও দলিল ভিত্তিক ধর্ম।এটা মানতে কুরআন ও সুন্নাহ(in to to) অনুসরণ করতে হয়। কোন পীর,ঈমাম কিংবা আলেম এর স্বপ্ন,ইচ্ছা,গনতন্ত্র, ভাল লাগা, না লাগার উপর ইসলাম নির্ভর করে না। আল্লাহ্‌ বলেন, আলেমদের অন্ধ অনুসরণ করা হারাম(সুরা নাহল:১৬/৪৩,সুর আ"রাফ:৭/৩, সুরা আহযাব:৩৩/৬৭) [Mahbubul ...

হকপন্থী দল কারা ?”

হকপন্থী দল কারা ?” সওবান (রাঃ) হ’তে বর্ণিত রাসূলুল্লাহ (ছাঃ) হকপন্থী দল সম্পর্কে ভবিষ্যদ্বাণী করে বলেন, "চিরদিন আমার উম্মতের মধ্যে একটি দল হকের উপরে বিজয়ী থাকবে। পরিত্যাগকারীরা তাদের কোন ক্ষতি করতে পারবে না, এমতাবস্থায় ক্বিয়ামত এসে যাবে, অথচ তারা ঐভাবে থাকবে ।” (সহীহ মুসলিম ‘ইমারত’ অধ্যায়-৩৩, অনুচ্ছেদ-৫৩, হা/১৯২০; ফাৎহুল বারী হা/৭১ ‘ইল্ম’ অধ্যায় ও হা/৭৩১১-এর ভাষ্য ‘কিতাব ও সুন্নাহকে, ‘আঁকড়ে ধরা’ অধ্যায়; আলবানী, সিলসিলা ছহীহাহ হা/২৭০) ইমাম আহমাদ বিন হাম্বল (১৬৪-২৪১ হিঃ)-কে ‘ক্বিয়ামত পর্যন্ত হক-এর উপরে একটি দল টিকে থাকবে’ মর্মে বর্ণিত হাদীছের ব্যাখ্যা জানতে চাইলে তিনি দ্ব্যর্থহীন ভাষায় বলেন, -“তারা যদি ‘আহলে হাদীস’ না হয়। তাহ’লে আমি জানি না তারা কারা ?” (তিরমিযী হা/২১৯২; মিশকাত হা/৬২৮৩-এর ব্যাখ্যা; ফাৎহুল বারী ১৩/৩০৬ পৃঃ, হা/৭৩১১-এর ব্যাখ্যা; সিলসিলা ছহীহাহ হা/২৭০-এর ব্যাখ্যা; শারফু আসহাবিল হাদীস পৃঃ ১৫।) ইমাম আবু আব্দুল্লাহ আল-হাকিম(মৃঃ ৪০৫ হিঃ) বলেন, ইমাম আহমাদ ইবনে হাম্বল এই মন্তব্য করে ভালোই করেছেন যে, কিয়ামত পর্যন্ত টিকে থাকার সেই বিজয়ী দলটি হল ‘আসহাবুল হাদিস’। (ম...