সরাসরি প্রধান সামগ্রীতে চলে যান

মৃতের পক্ষ থেকে কুরবানী করা

মৃতের পক্ষ থেকে কুরবানী করা:mdmokles2@gmail.com

এই প্রসঙ্গটির কয়েকটি দিক রয়েছেঃ

ক- কোনো মৃতের পক্ষ থেকে স্বতন্ত্ররূপে একটি আলাদাই কুরবানী দেওয়া। যেমন, একটি ছাগল বা গরু বা গরু কিংবা উটের কোনো বিশেষ এক-দুই ভাগ মৃতের জন্য দেয়া। মৃতের জন্য এমন স্বতন্ত্র কুরবানী বৈধ নয়। সত্যিকারে কুরবানীর সুন্নতটি জীবিতদের জন্য এটা মৃতদের জন্য নয়। তাই নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তাঁর মৃত প্রিয়া স্ত্রী খাদীজা (রাযিঃ), তাঁর মৃত প্রিয় চাচা হামযা (রাযিঃ) এবং মৃত প্রিয় সন্তানাদির কারোর পক্ষ থেকে কুরবানী দেন নি। বরং তিনি নিজের ও নিজ পরিবারে পক্ষ থেকে কুরবানী দিতেন।

খ- এমন ব্যক্তি যে কাউকে মৃত্যুর পূর্বে অসীয়ত করে যায় যে, সে মারা গেলে তার পক্ষ থেকে যেন সে কুরবানী দেয়, তাহলে সেই মৃত ব্যক্তির অসীয়ত অনুযায়ী এবং তার অসীয়ত বাস্তবায়নে কুরবানী করা বৈধ। কারণ আল্লাহ তাআলা বলেনঃ “অতঃপর যে ব্যক্তি তা শুনার পর অসীয়তে পরিবর্তন ঘটাবে, তবে তার গুনাহ তাদেরই উপর বর্তাবে, যারা তার পরিবর্তন ঘটাবে।” [সূরা বাক্বারা/১৮১]

আলী (রাযীঃ) হতে প্রমাণিত রয়েছে যে, তিনি দুটি ভেড়া কুরবানী দেন এবং বলেনঃ রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম আমাকে অসীয়ত করে গেছেন যেন আমি তার পক্ষ থেকে কুরবানী দেই, তাই আমি তার পক্ষ থেকে কুরবানী দিয়ে থাকি”। [আবু দাঊদ, তিরমিযী, হাদীটিকে শাইখ আলবানী যয়ীফ বলেছেন]

গ- জীবিতদের পক্ষ থেকে কুরবানী দেয়ার সময় পরিবারের মৃতদেরও সওয়াবে ভাগিদার করার নিয়ত করা। এমন করা একটি বিতর্কিত বিষয়। কেউ এটাকে বৈধ বলেন আর কেউ অবৈধ। বৈধতার পক্ষে দলীল হল, নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম কুরবানী দিতেন ও বলতেনঃ “হে আল্লাহ! এটা মুহাম্মদের পক্ষ থেকে এবং মুহাম্মদের পরিবারের পক্ষ থেকে”। [মুসলিম] অথচ পরিবারের অনেকেই ইতিপূর্বে মৃত্যু বরণ করেছিল। আর যারা অবৈধ মনে করেন, তাদের নিকট দলীলটি স্পষ্ট নয় এবং তার পরে খুলাফায়ে রাশেদীন থেকে এমন করা প্রমাণিত নয়। [শারহুল মুমতি ৭/৪৭৯-৪৮০]

মন্তব্যসমূহ

এই ব্লগটি থেকে জনপ্রিয় পোস্টগুলি

তিন শ্রেণীর লোক দ্বারা সর্বপ্রথম জাহান্নাম উদ্বোধন

♪♪তিন শ্রেণীর লোক দ্বারা সর্বপ্রথম জাহান্নাম উদ্বোধন করা হবে। যথাঃ (ক) শহীদ। (খ) আলেম এবং (গ) দানবীর। ★হাদিস: তিন শ্রেণীর লোক সর্বপ্রথম জাহান্নামে যাবেঃ প্রখ্যাত সাহাবী আবু হুরায়রা রাদিয়াল্লাহু আনহু বলেন, আমি রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামকে ইরশাদ করতে শুনেছি, নবীজী বলেন:কেয়ামতের দিন সর্বপ্রথম যাদের বিচার করা হবে, শাহাদত বরণকারী একজন লোক, তাকে উপস্থিত করা হবে এবং আল্লাহ প্রদত্ত্ব যাবতীয় নেয়ামত সম্পর্কে জ্ঞাত করা হবে সে সব নেয়ামতকে চিনে বা মেনে নেবে। তখন তাকে বলা হবে: এসব নেয়ামতের পরিপ্রেক্ষিতে তুমি কি কি আমল করেছ? বলবে: আপনার তরে লড়াই-জিহাদ করেছি এবং শহীদ হয়ে গিয়েছি। বলা হবে: তুমি মিথ্যা বলছ। বরং তুমি লড়াই করেছ এজন্য যে, লোকেরা তোমাকে বীর-বাহাদুর বলবে। তাতো বলা হয়েছে। অত:পর তার ব্যাপারে রায় ঘোষণা করা হবে এবং তাকে চেহারার উপর ভর দিয়ে টেনে নিয়ে (যাওয়া হবে এবং) জাহান্নামে নিক্ষেপ করা হবে। →দ্বিতীয় পর্যায়ে, আলেম ব্যক্তি যে নিজে দ্বীনী ইলম শিক্ষা গ্রহণ করেছে, অপরকে শিক্ষা দিয়েছে এবং কোরআন পড়েছে। তাকে উপস্থিত করা হবে এবং প্রদত্ত নেয়ামত সম্পর্কে জ্ঞাত করা হবে। সে সব নেয়ামত...

ভ্রান্ত আলেম

ভ্রান্ত আলেম ভ্রান্ত আলেমঃ- নবি(স) বলেন,আমি আমার উম্মতের একটি বিষয়কে দজ্জালে চেয়ে ও বেশী ভয় করি। আমি ভয় পেয়ে জিজ্ঞেস করলাম, হে আল্লাহর রসুল সেটা কি? তিনি বল্লেন,বিপথগামী ও পথভ্রষ্ট আলেম(সহি মুসলিম:৬,৭ মুসনাদে আহমদ:২১৬২১,২১৬২২ তাবরানী:৭৬৫৩)। আলেমগন(ভাল) ইসলামের পাহরাদার বল্লেও, দুর্ভাগ্য যে বর্তমানে কিছু লোক (পীর নিয়ন্ত্রিত) মাদ্রাসায় সাজেশান পড়ে আলেম সার্টিফিকেট সংগ্রহ করে, কিন্তু তারা কুরআন সম্পূর্ণ পড়ে না,বিধায় আমাদের সমাজে পথভ্রষ্ট ও ভ্রান্ত আলেম বেড়ে গেছে। তাদের অজ্ঞতায় সৃজিত জাল-যঈফ হাদিসের জন্য সাধারণ মুসলিম শির্ক ও বিদাআত চিনতে পারছেন না। এরাই বর্তমানে বলে বেড়ায় "ধর্ম বুঝা কঠিন, মাদ্রাসা না পড়লে কোন ভাবেই ধর্ম জানা যায় না তারচে তারা যা বলে তা অন্ধ ভাবে অনুসরণ করতে"। প্রকৃত পক্ষে- এটি সহজ ও দলিল ভিত্তিক ধর্ম।এটা মানতে কুরআন ও সুন্নাহ(in to to) অনুসরণ করতে হয়। কোন পীর,ঈমাম কিংবা আলেম এর স্বপ্ন,ইচ্ছা,গনতন্ত্র, ভাল লাগা, না লাগার উপর ইসলাম নির্ভর করে না। আল্লাহ্‌ বলেন, আলেমদের অন্ধ অনুসরণ করা হারাম(সুরা নাহল:১৬/৪৩,সুর আ"রাফ:৭/৩, সুরা আহযাব:৩৩/৬৭) [Mahbubul ...

হকপন্থী দল কারা ?”

হকপন্থী দল কারা ?” সওবান (রাঃ) হ’তে বর্ণিত রাসূলুল্লাহ (ছাঃ) হকপন্থী দল সম্পর্কে ভবিষ্যদ্বাণী করে বলেন, "চিরদিন আমার উম্মতের মধ্যে একটি দল হকের উপরে বিজয়ী থাকবে। পরিত্যাগকারীরা তাদের কোন ক্ষতি করতে পারবে না, এমতাবস্থায় ক্বিয়ামত এসে যাবে, অথচ তারা ঐভাবে থাকবে ।” (সহীহ মুসলিম ‘ইমারত’ অধ্যায়-৩৩, অনুচ্ছেদ-৫৩, হা/১৯২০; ফাৎহুল বারী হা/৭১ ‘ইল্ম’ অধ্যায় ও হা/৭৩১১-এর ভাষ্য ‘কিতাব ও সুন্নাহকে, ‘আঁকড়ে ধরা’ অধ্যায়; আলবানী, সিলসিলা ছহীহাহ হা/২৭০) ইমাম আহমাদ বিন হাম্বল (১৬৪-২৪১ হিঃ)-কে ‘ক্বিয়ামত পর্যন্ত হক-এর উপরে একটি দল টিকে থাকবে’ মর্মে বর্ণিত হাদীছের ব্যাখ্যা জানতে চাইলে তিনি দ্ব্যর্থহীন ভাষায় বলেন, -“তারা যদি ‘আহলে হাদীস’ না হয়। তাহ’লে আমি জানি না তারা কারা ?” (তিরমিযী হা/২১৯২; মিশকাত হা/৬২৮৩-এর ব্যাখ্যা; ফাৎহুল বারী ১৩/৩০৬ পৃঃ, হা/৭৩১১-এর ব্যাখ্যা; সিলসিলা ছহীহাহ হা/২৭০-এর ব্যাখ্যা; শারফু আসহাবিল হাদীস পৃঃ ১৫।) ইমাম আবু আব্দুল্লাহ আল-হাকিম(মৃঃ ৪০৫ হিঃ) বলেন, ইমাম আহমাদ ইবনে হাম্বল এই মন্তব্য করে ভালোই করেছেন যে, কিয়ামত পর্যন্ত টিকে থাকার সেই বিজয়ী দলটি হল ‘আসহাবুল হাদিস’। (ম...